কে এম মিঠু, টাঙ্গাইল :
প্রায় চারশত বছরের পুরনো বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এ ঐতিহাসিক মসজিদটি টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ারে অবস্থিত। আতিয়া গ্রামের সাথে মিল রেখেই মসজিদের নামকরণ করা হয়েছে।
পুরাতন দশ টাকার নোটের ডানদিকে এ মসজিদটির ছবি আমরা অনেকেই দেখেছি। তবে আজকাল দশ টাকার পুরাতন নোটটি আর তেমন পাওয়া যায় না বলে মসজিদটির ছবিও চোখে পড়ে না।
টাঙ্গাইল শহর থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে ছোট নদী লৌহজং মসজিদের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে।
মসজিদটির দৈর্ঘ্য ১৮ মিটার এবং প্রস্থ ১২ মিটার। আতিয়া মসজিদে চারটি গোলাকার গম্বুজ রয়েছে যেগুলোর মধ্যে বড় গম্বুজটি মসজিদের পশ্চিম অংশে অবস্থিত। বাকি তিনটি গম্বুজ আকারে ছোট এবং মসজিদের পূর্বদিকে একই সারিতে অবস্থিত। মসজিদের চারকোণায় চারটি চমৎকার নকশা করা পিলার ছাড়াও বাহিরের দেয়ালে চমৎকার বৃত্তের মাঝে ছোট ফুলের নকশার কাজ রয়েছে। মসজিদের পূর্বদিকে তিনটি, উত্তর ও দক্ষিন দিকে দুটি করে প্রবেশপথ রয়েছে।
১৬১০ সালে বাইজিদ খান পন্নীর পুত্র মুসলিম জমিদার সাইদ খান পন্নী এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। স্থানীয়রা বলে থাকেন সাধক শাহ বাবা কাশ্মীরির সম্মানে এই আতিয়া মসজিদটি নির্মাণ করা হয়।
১৮০০ সালের প্রচণ্ড ভুমিকম্পে আতিয়া মসজিদ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ১৮৩৭ সালে মসজিদটি পুনঃ নির্মাণ করা হয়। এছাড়া ১৯০৯ সালে টাঙ্গাইলের করটিয়ার জমিদার ওয়াজেদ আলী খান পন্নী ও দেলদুয়ারের জমিদার আবু আহমেদ গজনবী খান যৌথভাবে মসজিদটি পুনঃ নির্মাণ করেন।
বর্তমানে মসজিদটির প্রতি দেখভালের কমতি থাকার চিহ্ন পড়েছে বিভিন্ন দেয়ালসহ মেঝেতে।
মসজিদ কমিটি কর্তৃপক্ষসহ বাংলাদেশ প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের সুদৃষ্টি কামনা করছি, কোন ভাবেই যেন চারশত বছরের পুরনো বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন আতিয়া মসজিদটি অবহেলার কারণে নষ্ট বা হারিয়ে না যায়।